raihan joy

কম্পিউটার কি এবং কিভাবে কাজ করে..

কম্পিউটারের সংজ্ঞা:-
কম্পিউটার (computer) শব্দটি গ্রিক শব্দ কম্পিউট(compute) থেকে এসেছে। উৎপত্তিগত অর্থে ল্যাটিন শব্দ Computer অর্থই হিসাব বা গণনা করা। যদিও computer শব্দের অর্থ গণনাকারী যন্ত্র কিন্তু আধুনিক কম্পিউটার শুধু গণনা কাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বর্তমানে কম্পিউটার একটি অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র যা বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তথ্যগ্রহণ করে এবং তা বিশ্লেষণ ও উপস্হাপন করে ডিস্কে বা স্মৃতিতে সংরক্ষণ করে রাখে ভবিষ্যতের জন্য

কম্পিউটার এখন গবেষনা থেকে শুরু করে যোগাযোগ, ব্যাবসা, চিকিৎসা ও গৃহস্থলী কাজেও ব্যবহার করা হচ্ছে। বৃটিশ নাগরিক র্চালস ব্যাবেজকে আধুনিক কম্পিউটারের জনক বলা হয়
 ১৯৬৪ সালে বাংলাদেশে প্রথম কম্পিউটার আসে।

কম্পিউটার কিভাবে কাজ করে:- 

কম্পিউটারের  অংশ:-
১. মনিটর (Monitor)
২. সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট (CPU)
৩. কি-বোর্ড (Key-Board)
৪. মাউস (Mouse)

কম্পিউটার সংগঠন:- 
চারটি অংশের সমম্বয়ে সংগঠিত হয়...
যথা:-
১. ইনপুট ডিভাইস বা গ্রহনমুখ মাধ্যম (Input Device)
২. সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট বা কেন্দ্রিয় প্রক্রিয়াকরণ অংশ (CPU)
৩. মেমোরি বা স্মৃতি(Memory)
৪. আউটপুট ডিভাইস বা নির্গমন  মাধ্যম (Output)

কম্পি্উটারের ইতিহাস( History of Computer):-
আজ যদি জিজ্ঞাসা করা হয় যে কম্পিউটারের আবিষ্কারক কে? তাহলে এর উত্তর হবে ব্যাপক। কারণ কম্পিঊটার একজন আবিষ্কার করেনি।যুগে যুগে বিভিন্ন ব্যাক্তি, প্রতিষ্ঠানের চেষ্টা। ও সাধনার ফলে আজকের আধুনিক কম্পিউটার আবিষ্কার হয়েছে এবং আরো অত্যাধুনিক কম্পিউটার আবিষ্কারের জন্য বিভিন্ন ব্যাক্তি, প্রতিষ্ঠান গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই কম্পিউটার আবিষ্কারের ইতিহাস জানতে হলে প্রথম থেকে আলোচনা করতে হবে। ইতিহাসে প্রথম আবিষ্কৃত গণনাকারী যন্ত্রের নাম অ্যাবাকাস (Abacus) যা প্রায় ৪০০০ বছর আগে চীনে তৈরি হয়। এটিই প্রথম গণনাকারী যন্ত্র যাকে কম্পিঊটারের পূর্বপূরুষ বলা হয়।সে থেকে আজ অবধি অনেক পর্যায় অতিক্রম করে বর্তমান আধুনিক কম্পিউটার আমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে।

আধুনিক কম্পিউটারের মৈালিক রুপরেখা তৈরী করেন বৃটিশ গণিতবিদ ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক চার্লস ব্যাবেজ  (Charles Babbage)। ১৮৩৩ সালে তিনি পূর্ব প্রজন্মের সকল যন্ত্র গণকের জন্য স্মৃতিভান্ডারের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে ‘অ্যানালিটিকেল” (Analytical) নামক একটি যন্ত্র তৈরীর পরিকল্পনা করেন। তার এ পরিকল্পনার উপর ভিত্তি করেই আজকের আধুনিক কম্পিউটার আবিষ্কৃত হয়েছে।এ কারনে চার্লস ব্যাবেজকে কম্পিউটারের আদি পিতা বা কম্পিউটারের জনক বলা হয়।চার্লস ব্যাবেজের পরিকল্পনা ও প্রচেষ্টা পরবর্তীকালে এ বিষয়ে গবেষণার পথ উন্মেচিত করেছে। পরবর্তীতে লেডি আগাষ্টা, ফ্রাস্ক বন্ডউইন সহ আরো অনেকে তার পথিকৃৎ হয়ে এ বিষয়ে নিজ ধারনার বিকাশ ঘটান।

বাংলাদেশে প্রথম কম্পিউটারের ব্যবহারঃ
বাংলাদেশে ব্যবহার করার জন্য প্রথম কম্পিউটার স্থাপিত হয় পরমাণু শক্তি কেন্দ্র, ঢাকায় ১৯৬৪ সালে। তখন পরমাণু শক্তি কেন্দ্র, ঢাকা ছিল তৎকালীন পাকিস্তান পরমাণু শক্তি কমিশনের পূর্বাঞ্চলীয় শাখা। সে হিসেবে তৎকালীন সমগ্র পাকিস্তানের প্রথম কম্পিউটার স্থাপিত হয় বাংলাদেশ শক্তি কেন্দ্র, ঢাকায়। বাংলাদেশে প্রথম কম্পিউটার ছিল আইবিএম -১৬২০  মডেলের। কম্পিউটার র‌্যাম (Ram) ছিল মাত্র ২০ কিলোবাইট।পরে র‌্যাম (Ram) এর ক্ষমতা বারিয়ে ৬৪ কিলোবাইট করা হয়।

১৯৮২-৮৩ সালে বাংলাদেশের পরমাণু শক্তি কমিশন সাভারে অবস্থিত পরমাণু শক্তি গবেষনা প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ৪র্থ প্রজন্মের আইবিএম -৪৩৪১ মেইনফ্রেম কম্পিউটার স্থাপিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত শিক্ষক, বিজ্ঞানী ও গবেষেকবৃন্দ পরমাণু শক্তি কেন্দ্র,ঢাকায় ঐ ১৯৬৪ সালে স্থাপিত কম্পিউটার ব্যাবহার করেই তাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সম্পন্ন করেছেন।
বাংলাদেমশ ২য় কম্পিউটারটি স্থাপিত হয় ১৯৬৫ সালে আদমজী জুট মিলে।কম্পিউটারটি ছিল আইবিএম -১৪০০ সিরিজের । এরপর তৎকালীন ইউনাইটেড ব্যাংক লিমিটেড(বর্তমানে জনতা ব্যাংক) স্থাপন করে আইসিএল-১৯০০ সিরিজের কম্পিউটার। স্বাধীনতার পরপরই ব্যুরো অব ষ্ট্যাটিসটিক্স (Bureau of Statistics)  আইবিএম -৩৬০ সিরিজের কম্পিউটার স্থাপন করে। ১৯৭৮-৭৯ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) প্রথমে আইবিএম -৩৭০ এবং পরে আইবিএম -৪৩০০ সিরিজের কম্পিউটার স্থাপন করে।এ কম্পিউটার পরে ব্যুরো অব ষ্ট্যাটিসটিক্স, বাংলাদেশ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত হয়।